প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: সোমবার , ৭ এপ্রিল , ২০২৫
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাটার শোরুমে হামলা-লুটপাটের প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক এই জুতা কোম্পানি বলেছে, ভ্রান্ত ধারণার উপর ভিত্তি করে আক্রান্ত হয়েছেন তারা।
সোমবার রাতে এক ক্রেতাদের উদ্দেশে এক বার্তায় বাটা বাংলাদেশ বলেছে, “আমরা লক্ষ্য করেছি যে, বাটাকে ঘিরে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি ইসরায়েলি মালিকানাধীন বা ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘর্ষে রাজনৈতিকভাবে জড়িত।
“বাটা একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যার যাত্রা শুরু হয়েছে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে এবং কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। দুঃখজনকভাবে, এই ভ্রান্ত ধারণার ফলে বাংলাদেশে আমাদের কিছু আউটলেট সম্প্রতি ব্যাপক ভাঙচুরের শিকার হয়েছে।”
সব ধরনের সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাটা বলেছে, “বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধা নিয়ে, ১৯৬২ সাল থেকে বাটা দেশজুড়ে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে চলেছে, গুণগত মান নিশ্চিত করছে। বাটা বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের সম্মান রক্ষায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ!”
গাজায় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের জেলায় জেলায় শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল, স্লোগান-সমাবেশ ও ধর্মঘট পালন করেন।
সকাল থেকে সারাদেশের জেলা-উপজেলা শহর ছিল প্রতিবাদমুখর। এসব বিক্ষোভের মধেই বিক্ষুব্ধ কিছু মানুষ ফাস্ট ফুড চেইন কেএফসি, পিৎজা হাট, বাটার মত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিক্রয় কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি কোমল পানীয় কোকাকোলা, সেভেন আপ রাখায় দেশি প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়।
দেশের অন্তত ছয় জেলায় ‘ইসরায়েলি পণ্য রাখা ও বিক্রি’ করার অভিযোগ তুলে ১৬টি রেস্তোরাঁ ও বিক্রয় কেন্দ্রে হামলা-ভাঙচুরের খবর এসেছে।
কক্সবাজারে পাঁচটি, চট্টগ্রামে তিনটি, সিলেট পাঁচটি, গাজীপুরে চারটি, কুমিল্লায় একটি এবং বগুড়ায় একটি প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে কেএফসি ও বাটাসহ দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে নেমেছে পুলিশ।
সোমবার দিনভর বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে এসব ঘটনার পর রাতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, “হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। এরইমধ্যে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে।”
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন চলার মধ্যে এমন ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ হিসাবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।