আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: বুধবার , ২ এপ্রিল , ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির উপর ৩৭ শতাংশ হারে ট্যারিফ বা শুল্ক আরোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
সব দেশের পণ্যের উপর পাল্টা ট্যারিফ বসানোর যে ঘোষণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট দিয়েছিলেন, বুধবার প্রত্যেক দেশের সেই শুল্কের আলাদা আলাদা হার নির্ধারণ করে দেন তিনি।
হোয়াইট হাউসে ট্যারিফ ঘোষণার সময় ট্রাম্প প্রত্যেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানিতে কত শতাংশ ট্যারিফ আদায় করে তা চার্ট আকারে তুলে ধরেন।
একইসঙ্গে, এখন ওইসব দেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিতে কত শতাংশ ট্যারিফ দিতে হবে, সেটিও ওই চার্টে তুলে ধরেন তিনি।
এটাকে তিনি বলছেন, ‘ডিসকাউন্ট দেওয়ার পর পাল্টা ট্যারিফ’। এক্ষেত্রে, কোনো দেশ যে পরিমাণ ট্যারিফ আরোপ করে তার অর্ধেক পরিমাণে ছাড় তিনি দিয়েছেন।
সেই হিসাবে চার্টে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৭৪ শতাংশ ট্যারিফ নেয়। আর এখন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক গুণতে হবে ৩৭ শতাংশ।
বাংলাদেশের মতো দেশগুলো দেশীয় শিল্পকে বাঁচানোর জন্য কিংবা বিলাস পণ্য ঠেকানোর জন্য, অনেক সময় বড় পরিমাণে আমদানি শুল্ক আরোপ করে থাকে।
বৈশ্বিকভাবে সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ ধরে ট্যারিফ আরোপ করেছেন ট্রাম্প। অর্থাৎ, পাল্টা ট্যারিফ হয়তো ১০ শতাংশ কিংবা নির্দিষ্ট দেশ যে হারে ট্যারিফ আরোপ করে, তার অর্ধেক ধরা হয়েছে।
ডিসকাউন্টের একই রকম হিসাবে ভারতের পণ্য আমদানিতে ২৬ শতাংশ পাল্টা ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছে; আর শ্রীলঙ্কার পণ্য আমদানিতে সেই হার ৪৪ শতাংশ, পাকিস্তানের উপর ২৯ শতাংশ, ভিয়েতনামের উপর ৪৬ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর ২০ শতাংশ।
ট্যারিফ কি এবং এর কী প্রভাব?
কোনো দেশ অন্য দেশের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে পণ্যের দামের ভিত্তিতে স্থানীয়ভাবে যে শুল্ক আরোপ করে, অর্থনীতির ভাষায় সেটাকে ট্যারিফ বলা হয়।
যেমন ধরা যাক, ৫০,০০০ ডলার দামের কোনো গাড়িতে যদি ২৫ শতাংশ ট্যারিফ ধরা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে সেটি আমদানির ক্ষেত্রে ১২,৫০০ ডলার শুল্ক গুণতে হবে।
দেশীয় যে কোম্পানি গাড়িটি আমদানি করে, তারা সেই শুল্ক পরিশোধ করে থাকে; রপ্তানিকারক নয়। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি তার দেশের সরকারকে চার্জ পরিশোধ করবে।
এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওই কোম্পানি যদি শুল্কের ভার ক্রেতার উপর চাপিয়ে দেয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে খুচরা বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে।
আর যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি যদি নিজের খাতায় ওই খরচের পরিমাণ রেখে দেয়, তাহলে তার মুনাফার হার কমে আসবে।
এ দুয়ের বিপরীতে তৃতীয় আরেকটা ঘটনাও ঘটতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের ধরে রাখার জন্য ট্যারিফ আরোপের প্রেক্ষাপটে পণ্যের পাইকারি দাম কমিয়ে দিতে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।