প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: রবিবার , ১২ অক্টোবর , ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান দুই দিন পেছানো হয়েছে। আগে নির্ধারিত ১৫ অক্টোবরের পরিবর্তে আগামী ১৭ অক্টোবর শুক্রবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে কমিশনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ছুটির দিনে অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে কমিশনের সুপারিশ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত আছে। বিশেষ করে গণভোটের দিন নির্ধারণ ও ভিন্নমত থাকা সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে দলগুলোর মতপার্থক্য কমানোর চেষ্টা চলছে।
সূত্র আরও জানায়, প্রধান উপদেষ্টা রোম সফর শেষে দেশে ফেরার পর আগামী বুধবার বা বৃহস্পতিবার জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কমিশনের প্রাথমিক সুপারিশ জমা দেওয়া হতে পারে। কমিশনের বর্তমান মেয়াদ ১৫ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়িয়ে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত করা হতে পারে।
শনিবার সন্ধ্যায় যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ও ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও সদস্য বদিউল আলম মজুমদার। বৈঠকে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই ১৭ অক্টোবর শুক্রবার স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়।
ছয়টি সংস্কার কমিশনের মোট ৮৪টি প্রস্তাবের ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। তবে সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো ঐকমত্য হয়নি। পাঁচ দিনের আলোচনাতেও এই ইস্যুতে মতবিরোধ কাটেনি।
শনিবার ঐকমত্য কমিশন জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলাদা বৈঠক করে। আজ রোববার বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র জানায়, জামায়াত ও এনসিপি উভয় দলই জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের পক্ষে অবস্থান জানায়। জামায়াত গণভোটের প্রশ্ন প্রণয়ন নিয়ে নিজেদের প্রস্তাব দেয়, আর এনসিপি জানায়—গণভোটের দিন নির্বাচন থেকে আলাদা হতে হবে। পাশাপাশি উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিত্বে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (PR system) বাস্তবায়নের জোর দাবি জানায় দলটি।
ঐকমত্য কমিশন দুই দলকেই তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে। কমিশন বিএনপির মতামতও আবার শুনতে চায়, কারণ বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের দিনই আলাদা ব্যালটে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “১৭ অক্টোবর শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে যাতে কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশে সবার মতামতের প্রতিফলন থাকে।”