চবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: বুধবার , ১৫ অক্টোবর , ২০২৫
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বুধবার (১৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। তিন যুগেরও বেশি সময় পর ভোটের এই উৎসব ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনায় মুখর হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সাড়ে ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে ফিরেছে বহুল প্রত্যাশিত ভোটাধিকার।
সকাল ৯টা থেকে শুরু ভোটগ্রহণ বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে চলবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রার্থীরা শাটল ট্রেন, একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন।
নির্বাচনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাস এখন উৎসবমুখর—পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ও ইশতেহারে সাজানো বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৫১৭ জন, এর মধ্যে ছাত্র ১৬ হাজার ৮৪ জন ও ছাত্রী ১১ হাজার ৪৩৪ জন।
চাকসু ও হল সংসদ মিলিয়ে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯০৮ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদে ৪১৫ জন এবং হল সংসদে ৪৯৩ জন প্রার্থী লড়ছেন। কেন্দ্রীয় সংসদে নারী প্রার্থী রয়েছেন ৪৮ জন ও পুরুষ প্রার্থী ৩৬৬ জন। এছাড়া ২৪ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
চাকসুর ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে ২৪ জন, জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস) পদে ২২ জন এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল সেক্রেটারি (এজিএস) পদে ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হল সংসদে ছাত্রদের ৯টি হল ও একটি হোস্টেল থেকে মোট ৩৫০ জন এবং ছাত্রীদের ৫টি হল থেকে ১২৩ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালের পর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি। ১৯৮১ সালের চতুর্থ চাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং ১৯৮৬ সাল থেকে ক্যাম্পাসে তাদের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯০ সালে শিবিরের আধিপত্যের বিরুদ্ধে ১২টি ছাত্র সংগঠন সর্বদলীয় ঐক্য গড়ে বেশিরভাগ পদে জয় পেলেও এরপর থেকে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন—এই নির্বাচন শুধু নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক চর্চার পুনর্জাগরণেরও প্রতীক।