প্রতিবেদক, ক্যাম্পাস মিরর প্রকাশিত: মঙ্গলবার , ১৮ মার্চ , ২০২৫
‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমোদন পেয়েছেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ট্রাস্ট।
সোমবার নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল হাসানকে লেখা চিঠিতে ২২ শর্তে এ অনুমোদন দেওয়ার কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আশরাফুল হাসান ড. ইউনূসের গ্রামীণ গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন, যার অধীনে রয়েছে গ্রামীণ ট্রাস্ট।
১৯৮৯ সালে অলাভজনক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ট্রাস্ট দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে সামাজিক ব্যবসাকে ব্যবহার করে থাকে।
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী ঢাকায় গ্রামীণ ইউনিভার্সিটিকে ৭ বছরের জন্য সাময়িক অনুমতি দেওয়ার কথা বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গ্রামীণ ইউনিভার্সিটিকে দেওয়া হয়েছে যেসব শর্ত:
>>সাময়িক অনুমতির মেয়াদ হবে অনুমতি প্রদানের পরবর্তী ০৭ (সাত) বছর;
>>প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এ বর্ণিত সকল বিধান ও শর্ত মেনে চলবে;
>>সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশন এ্যাক্ট, ১৮৬০ অনুযায়ী বোর্ড অব ট্রাস্টিজ রেজিস্ট্রেশন সম্পাদনপূর্বক তা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে হবে;
>>পাঠদানের নিমিত্ত প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি, মিলনায়তন, সেমিনার কক্ষ, অফিস কক্ষ, শিক্ষার্থীদের পৃথক কমনরুম এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কক্ষের জন্য পর্যাপ্ত স্থান ও অবকাঠামো থাকতে হবে;
>>প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যূন ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার) বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট নিজস্ব বা ভাড়াকৃত ভবন থাকতে হবে;
>>প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম ৩ (তিন) টি অনুষদ এবং উক্ত অনুষদের অধীন অন্যূন ৬ (ছয়) টি বিভাগ থাকতে হবে;
>>প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় উহার শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কিত একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে, যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক পূর্বে অনুমোদিত হতে হবে;
>>প্রস্তাবিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যেক বিভাগ, প্রোগ্রাম ও কোর্সের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যক পূর্ণকালীন যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে;
>>প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিতব্য শিক্ষক অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে তাদের মূল নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ছাড়পত্র মঞ্জুরী কমিশনে জমা দিতে হবে;
>>প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিবিড় পাঠক্রম (Curriculum) এবং প্রতিটি বিষয় ও কোর্স প্রণয়নসহ প্রত্যেক বিষয়ে মোট আসন সংখ্যা উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পূর্ব অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে;
>>প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সংরক্ষিত তহবিল (Reserve Fund) হিসেবে অন্যূন ১.৫ (এক কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা যে কোনো তফসিলী ব্যাংকে জমা থাকতে হবে এবং সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত তা বা এর লভ্যাংশ উত্তোলন করা যাবে না;
>>প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর বিবেচিত হতে পারে এমন কোনো কার্যকলাপে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করবে না এবং সন্ত্রাসী বা জঙ্গি তৎপরতা বা এই জাতীয় কোনো কার্যকলাপে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কোনোভাবেই কোনো পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করবে না;
>>কেবলমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত অনুষদ, বিভাগ ও কোর্সে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি এবং শুধু ক্যাম্পাসভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে;
>>সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পূর্বানুমোদন ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যাবে না;
>> নির্দিষ্ট শহর বা স্থানে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ক্যাম্পাস সীমিত রাখতে হবে এবং অন্য কোনো স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রম পরিচালনা বা কোনো ক্যাম্পাস বা শাখা স্থাপন ও পরিচালনা করা যাবে না;
>>স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অনুমোদন ব্যতিরেকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কোনোরূপ মেডিকেল-ডেন্টাল ফ্যাকাল্টি অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো কোর্স যেমন-ফিজিওথেরাপি, প্যারা মেডিকেল, মেডিকেল টেকনোলেজি ইত্যাদি পরিচালনা করা যাবে না;
>>বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বিদেশি নাগরিককে শিক্ষক-বিশেষজ্ঞ হিসেবে কিংবা কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ করতে হলে এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট সরকারি বিধান যথাযথভাবে পালন করতে হবে;
>>সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এর পূর্বানুমোদন ব্যতীত বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কোনো ধরণের চুক্তি বা Academic Collaboration করা যাবে না;
>>বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জরুরি ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ স্ট্যাটিউটস (Statutes) প্রণয়ন করে তা অনুমোদনের লক্ষ্যে যথানিয়মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এর নিকট দাখিল করতে হবে;
>>বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বিধান, সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বিদ্যমান ও সময়ে সময়ে জারিতব্য আদেশ-নির্দেশ, নীতিমালা ইত্যাদি যথাযথভাবে অনুসরণ ও প্রতিপালন করতে হবে;
>>বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী অস্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের তারিখ থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ভূমি ও পর্যাপ্ত অবকাঠামোর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ীভাবে স্থাপন করতে হবে;
>> বিশ্ববিদ্যালয় বা এর পক্ষে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, চ্যান্সেলরের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, দেশের বাইরের কোনো উৎস হতে কোনো তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে না। অনুরূপ কোনো তহবিল সংগ্রহ করতে হলে সরকারের মাধ্যমে চ্যান্সেলরের নিকট এতদসংক্রান্ত অনুমোদন গ্রহণের প্রস্তাব দাখিল করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, “উপর্যুক্ত শর্তসমূহ উল্লেখ করে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিনশত টাকার স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা সরকার বরাবর দাখিল করবে এবং শর্তসমূহ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকল অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীকে জানাতে বাধ্য থাকবে।”